একটি ফসলের নাম কাউন।যা এক সময় ঠাকুর গাঁও জেলার ৭ উপজেলায় গ্রামেগঞ্জে ব্যাপক হারে কাউন চাষ হত কিন্তু বর্তমানে উন্নত জাতের নানান লাভ জনক ফসলের প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে কৃষকের অনাগ্রহের কারনে বিলুপ্তির দার প্রান্তে কাউন।ফসলটি যেন কালের গর্ভে বিলীন হতে চলেছে।
কাউনের বৈজ্ঞানিক নাম ছিটারিয়া ইটালিকা গোত্র-গ্রামিনি।কাউন হচ্ছে পুষ্টিকর দানা জাতীয় খাদ্য শস্য। কাউন দিয়ে বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার যেমন- পিঠা, পায়েস, বিস্কুট সহ অনেক খাদ্য তৈরী করা হয়। তাই দানা জাতীয় ফসল হিসেবে কাউনের চাহিদা গ্রাম/শহরসব খানেই আছে। কাউন চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা
পূরণের পাশাপাশি অতিরিক্ত উৎপাদিত শস্য বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করা যায়, সাথে সাথে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব। কাউনের বীজ বপন করার উপযোগী সময় অগ্রহায়ণ – মাঘ মাস (মধ্য নভেম্বর – মধ্য ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত।প্রায় সব ধরণের মাটিতেই কাউনের চাষ করা যায়।
তবে পানি জমে না এ রকম বেলে দো-আঁশ মাটিতে এর ফলন ভাল হয়। কাউনের দেশি- বিদেশি জাতের সাথে তুলনামূলক মূল্যায়নের পর ১৯৮৯ সালে তিতাস নামের জাতটির অনুমোদন দেয়া হয়, এটি উচ্চ ফলনশীল জাত। আগাম ও এ জাতটিগোড়া পঁচা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। গাছ মাঝারি লম্বা,
পাতা সবুজ রঙের এবং কান্ড শক্ত, গাছ সহজে নুয়ে পড়ে না। এর র্শীষ লম্বা, মোটা এবং রোমশ। বীজ মাঝারি আকারের এবং ঘি বর্ণের। স্থানীয় জাতের চেয়ে ফলন প্রায় ৩০-৩৫% বেশি।জাতটি রবি মৌসুমে ১১৫ এবং খরিফ মৌসুমে ৮৫-৯৫ দিনে তোলা যায় ,
রবি মৌসুমে তিতাসের ফলন বিঘাপ্রতি প্রায় ৩৩৫ কেজি এবং খরিফ মৌসুমে এর ফলন একটু কম হয়।৩-৪টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে জমি ভাল ভাবে ঝরঝরে করে নিতে হবে। কাউনের বীজ ছিটিয়ে ও সারি করে বোনা যায়। তবে সারিতে বীজ বপন করলে চাষের সময় পরিচর্যা করতে সুবিধা হয় এবং ফলন বেশি পাওয়া যায়।
গুণগত মানসম্পন্ন ভালো ফলন পেতে হলে কাউন চাষের জমিতে জৈবসার প্রয়োগ করলে ভাল হয়। কাউন হচ্ছে একটি খরা সহিষ্ণু ফসল। জমিতে আগাছা থাকলে পোকামাকড়, রোগ জীবাণু ও ইঁদুরের আক্রমণ বেশি হয়।তাই বীজ বপনের ১৫-২০ দিন পর নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে।
কাউনের শীষ খড়ের রঙ ধারণ করলে এবং বীজ দাঁতে কাটার পর কট করে শব্দ হলে বুঝতে হবে কাটার উপযুক্ত সময় হয়েছে।বিঘা প্রতি প্রায় ৪-৫ মন কাউন পাওয়া যায়। প্রতি বিঘা জমিতে কাউন চাষের জন্য প্রয়োজন প্রায় ৪০০০-৫০০০ টাকা। কৃষক, আবদুল গফফার (৭০)জানান
আগের দিনে আমরা অহরহ কাউন চাষ করতাম ধানের বিক্লপ হিসেবে কাউন আবাদ ছিল বেশি কাউনের ভাত ক্ষীরের কদর ও ছিল বেশি কিন্তু আধুনিক চাষাবাদ ভুট্টা, ধান, গম অধিক উৎপাদন শীল ফসল আসায় এখন কাউন চাষ প্রায় বিলুপ্তির পথে।