“কৃষ্ণচূড়া ফুল! তুমি ফুটবে বলে আজ প্রকৃতি এক অন্যরকম অপরূপ সাজে সেজেছে।”
গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে প্রকৃতি যখন রসহীন হয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই কৃষ্ণচূড়া তার অপার সৌন্দর্য নিয়ে হাজির হয়েছে আমাদের মাঝে। কাঠফাটা দুপুরে কোকিলের মায়াবী কণ্ঠে গান, ঝিঁঝি পোকার ডাক আর চোখের সামনে রক্তাভ কৃষ্ণচূড়া তপ্ত রোদের মাঝেও এক ঝিলিক আনন্দ দিচ্ছে হৃদয়ে।
কৃষ্ণচূড়া ফুল নিঃসন্দেহে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সৌন্দর্য ও অনুপ্রেরণার এক মূল্যবান প্রতীক হয়ে উঠেছে। এর লোভনীয় রং, সূক্ষ্ম রূপ, এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ইতিহাস ক্যাম্পাস সম্প্রদায়কে প্রকৃতির বিস্ময়গুলির জন্য একটি যৌথ উপলব্ধিতে একত্রিত করেছে।
ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবন, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, ভিসির বাসভবন সহ বিভিন্ন জায়গায় ডালপালা ছড়ানো কৃষ্ণচূড়াগুলো সৃষ্টি করেছে রক্তিম বর্ণের এক মোহনীয়তা। ছোট্ট এ ক্যাম্পাসের কৃষ্ণচূড়াগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। ক্যাম্পাসে যেন সবুজ প্রকৃতির মাঝে লাল রঙে কৃষ্ণচূড়ার পসরা সাজিয়ে বসে আছে প্রকৃতি, যে কারো চোখে এনে দেয় শিল্পের দ্যোতনা।
বছরের অন্যান্য সময় এই ফুল বা গাছ সচরাচর চোখে না পড়লেও এপ্রিল মে মাসে যখনি গাছে নতুন পাতা বা ফুল ফোটা শুরু করে তখনি যেন পথচারীর নজর কাড়ে মনোমুগ্ধকর এই কৃষ্ণচূড়া।
কৃষ্ণচূড়ার অপররুপ সৌন্দর্য সম্পর্কে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওবাইদুর রহমান শিশির বলেন
“কৃষ্ণচূড়ার লাল রং পথিকের এবং সৌন্দর্যপ্রেমী সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের সমারোহ ক্যাম্পাসে বাড়ায় সৌন্দর্যপ্রেমীদের এবং বৃক্ষপ্রেমীদের আনাগোনা। তাই যখন রাস্তা দিয়ে হেটে যাই গাঢ় সবুজের মাঝে টকটকে লাল কৃষ্ণচূড়ার সুশোভিত রুপ সত্যি হৃদয়ের ভিতরে আলোড়ন তোলে।”
আরেক শিক্ষার্থী নাহিদ আহমেদ বলেন,
“আমাদের ক্যাম্পাস কে প্রাণবন্ত করেছে যারা,তাদের মধ্যে কৃষ্ণচূড়া অন্যতম। মনের অজান্তেই যেন বিশেষ এক প্রশান্তি কাজ করে কৃষ্ণচূড়া রাস্তায় হাঁটার সময়। লাল লাল ফুলগুলো দেখে যেন মন প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে। সবুজ এই ক্যাম্পাসের মধ্যে কৃষ্ণচূড়া যেন লাল আভা ফুটিয়ে তুলেছে তার অনন্যতায়।”
উল্লেখ্য, কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া। এটি ফাবাসিয়ি পরিবারের অন্তর্গত। এর আদি নিবাস আফ্রিকার মাদাগাস্কার। ১৮২৪ সালে সেখান থেকে প্রথম মুরিটাস, পরে ইংল্যান্ড এবং শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিস্তার ঘটে। ধারণা করা হয়, কৃষ্ণচূড়া ভারত উপমহাদেশে এসেছে তিন থেকে চারশ বছর আগে। বহুকাল ধরে রয়েছে বাংলাদেশে।