Tags: ফেনী, বন্যাকবলিত
লিজু আক্তার। ফেনীর পরশুরাম উপজেলার চিথুলিয়ায় বাড়ি। সাতদিন আগে গভীর রাতে ভয়াবহ পানির স্রোতে ঘরবাড়ি সবই হারান। উজান থেকে আসা ঢলে সব হারিয়ে সাঁতরে আশ্রয় নেন চিথুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। গত সাতদিন এখানেই বাস করছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে লিজু বললেন, ‘বাড়িত কিছুই নাই। আঁর বাড়ির টিনের চালও নাই। বেক হানিতে ভাসি গেছে।’
চল্লিশোর্ধ্ব এই নারী গত বুধবার রাতে আচমকা পানির তোড়ে সর্বস্ব হারিয়ে চলে আসেন আশ্রয়কেন্দ্রে। ভয়াবহ সেই রাতের স্মৃতি মনে পড়লেই অঝোরে কাঁদেন তিনি। লিজু আরও জানান, এক বাড়িতে তারা ১৫ সদস্যের পরিবারখাওয়া যায়? যদি চাল-ডাল দিতো তাহলে রান্নার ব্যবস্থা করতাম। বাড়িতে পানি কতোদিনে কমবে কে জানে!
আলাউদ্দিন নাসিম চৌধুরী কলেজে আশ্রয় নেয়া শাকেরা বেগম বলেন, চিঁড়া-গুড় দিয়ে তিন বেলা খাওয়া কষ্ট। আল্লাহ খাওয়াইতেছে খাইতেছি। বাড়িতে তো ঘরটা আবার কবে তুলবো কে তুলে দিবো জানি না। সব অন্ধকার লাগে।
একই আশ্রয়কেন্দ্রের সাইফুল ইসলাম বলেন, এই জেল থেকে কবে মুক্তি পাবো জানি না। বাড়ির পানি এখনো কোমর সমান। শুকনা খাবার আর কতো ভালো লাগে।
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার পুরনো মুন্সির হাটের উত্তর শ্রীপুরে পাটোয়ারী টাওয়ারে আশ্রয় নিয়েছেন নারী-শিশুসহ আড়াইশরও বেশি মানুষ। তাদের অনেকে জানান, যারা খাবার দিচ্ছেন বেশির ভাগই শুকনো। চাল-ডালসহ মুদি পণ্য দিলে নিজেরা রান্নার ব্যবস্থা করতে পারতেন।
পথে পথে খাবার পেতে হাত তুলছেন শত মানুষ:
ফেনীর ফুলগাজীর আনন্দপুর থেকে পশুরাম সদর পর্যন্ত পুরো সড়কটি প্রায় ২০ কিলোমিটার। এই সড়কের উপর শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে থাকেন খাবারের জন্য। নারী পুরুষ শিশু বৃদ্ধ সবাই ত্রাণের গাড়ি দেখলেই থামাচ্ছেন। স্বেচ্ছাসেবীরা গাড়ি থামিয়ে বিতরণ করছেন খাবার। তবে অনেক গাড়িই থামে না। তারা জানায় নির্দিষ্ট আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে মিলবে খাবার।।