বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে দোয়া ও জন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আজ রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় রত্নাই বগুলাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে ও কলেজ মাঠে দোয়া ও শান্তি জন সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশের সূরা সদস্য ও ঠাকরগাঁও – ২ আসনের ২০ দলীয় জোটের সাবেক প্রার্থী এবং জেলা আমির মুজলুম জননেতা অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল হাকিম।
আমজানখোর ইউনিয়ন জামাতের আমির মো: রাজিউর রহমান রাজুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারি অধ্যাপক সরিফুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রশিদ মাষ্টার, উপজেলা জামায়াত নেতা ও আমজানখোর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আইয়ুব আলী।
উপজেলা জামায়াতের প্রেস মিডিয়ার সম্পাদক হাসান আলীর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন-
আমজানখোর ইউনিয়ন জামায়াতের সেকেটারি ওয়াহিদুজ্জামান, উপজেলা যুব বিভাগের সাধারণ সম্পাদক মো: সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্য মুজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হাকিম বলেন, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার কারণ আমরা জানি না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। কারণ ফ্যাসিবাদী ওই সরকারের বিরুদ্ধে দেশের ছাত্র-জনতা আন্দোলন করেছে। সেখানে জামায়াতে ইসলামীও সহযোগী শক্তি হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ক্ষেত্রে দলটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’
জামায়াত নিষিদ্ধের আদেশ প্রত্যাহারের পরই দলটির নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের আমলে দেশের জনগণের সাংবিধানিক অধিকার, জনগণের ভোটের অধিকার, সভা সমাবেশের অধিকার কেড়ে নিয়েছিলো, জনগণের মৌলিক থেকে বঞ্চিত করেছিল, আমাদের জামায়াত-
বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা হয়রানি করে তারা বিনা ভোটে নির্বাচন করে দেশে অবৈধ সরকার গঠন করেছিলো।
২০০৮ সালে ঠাকুরগাঁও-২ আসনে ২০ দলীয় জোটের মনোনয় পত্র দাখিল করার পর ভোটে আগের আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেল হাজতে বন্দী করে রেখেছিলো, নির্বাচন প্রচারণাকালে রাজনৈতিক নেতা সন্ত্রাসী মনোভাব নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছিলো তা জনগণের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছিল। শুধু তাই নয় আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের আমলে বিএনপি জামায়াতের সমর্থিত নেতা কর্মীরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও কথা বার্তা বলতে পারেনি।
১ আগষ্ট জামায়াতের নিবন্ধ বাতিল করেছিলো ৪ দিন পরেই ছাত্র জনতা ও জামায়াত, বিএনপিসহ দেশের জনগণের আন্দোলনের মুখে বিনা ভোটের আওয়ামীলীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়ে ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন।
তিনি উল্লেখ করেন, সংখ্যালঘু বলে কোন কথা নয়, হিন্দু মুসলিম খ্রিস্টান, বোদ্ধ দেশের নাগরিকের সবার সমান অধিকার রয়েছে, তাই দেশের জনগণ সমান অধিকার ভোগ করবেন। অবৈধ আওয়ামীলীগ সরকার আয়নার ঘরে যাদের আটক করে রেখেছিলো তাদের মধ্যে ৩ জনকে ৮ বছর ধরে চোখ বন্ধ করে অন্ধকারে বন্ধী করে রেখেছিলো, তাদের মধ্যে ৩ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে এখনো তাদের জ্ঞান ফিরছে না।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ১১ জন নেতাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে ফাঁসির মঞ্চে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মাওলানা আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী শুধু দেশে নয় সাড়া বিশ্বে মুসলিম উম্মার ইসলাম কায়েমে পরিচিতি লাভ করেছে তার মতো একজন মহান নেতাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে ১৩ বছর ধরে ১৩ বছর ধরে জেল হাজতে বন্ধ করে রেখেছিল। তািনি তার সন্তান, স্ত্রীর দেখা করতে চাইলেও তাদেরকে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। সুস্থ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দুই ঘন্টা পরে তার মৃত্যু হয়। দেশের নিয়ম অনুযায়ী একজন সাবেক সংসদ সদস্যর মৃত্যু হলে জাতীয় সংসদ প্লাজায় জানাজা হবার নিয়ম থাকলেও সেখানে জানাজা নামাজ না করে তার লাশ পিরোজপুরে পাঠিয়ে দেয়। দেশের জনগণ তার গায়েবানা জানাজা নামাজ আদায় করতে চাইলে পুলিশ বাঁধা দিতো।
আলোচনা শেষে বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে ও দেশের শান্তি কামনায় দোয়া পাঠ করেন জেলা জামায়াতের আমির মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হাকিম।