আজ বিশ্ব ইসলামি আন্দোলনের অন্যতম রূপকার ইখওয়ানুল মুসলিমিনের প্রতিষ্ঠাতা ইমামুদ-দাওয়াহ শহীদ হাসান আল বান্না রহ.-এর ৭৫ তম শাহাদাত বার্ষিকী।
সময়টা ছিলো, ঔপনিবেশিকতার জাঁতায় পিষ্ট মুসলিম উম্মাহ ধুঁকছিল হতাশা আর নিষ্ক্রিয়তার চোরাবালিতে। নিভু নিভু করে জ্বলা সর্বশেষ আশার আলো উসমানি খিলাফতের ধ্বংসাবশেষটুকুও নিশ্চিহ্ন হয় ১৯২৪ সালে। হতাশা আর জড়তার এই ভাঙনমুখর সময়ে এক মুয়াজ্জিনের নীরব কিন্তু দৃঢ়লয় পথচলা শুরু হয় মিশরের সুয়েজ তীর থেকে। তাঁর প্রভাবক আজানে একে একে জড়ো হয় হীরকখণ্ডগুলো।
সেই আজানের প্রত্যয়ী সুর একসময় মিশর ছাড়িয়ে পুরো বিশ্বের ইথারে ইথারে ছড়িয়ে পড়ে। মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র একটি পুনর্জাগরণের সাড়া পড়ে যায়। একটি নতুন যুগের সূচনা হয় মুসলিম বিশ্বে। জড়তা আর নিষ্ক্রিয়তার বিপরীতে উদ্যম আর সক্রিয়তার উত্তাপ ছড়িয়ে যায় সমগ্র উম্মাহর মাঝে।
নতুন যুগের এই নির্মাতার নাম হাসান আল বান্না, যার অনিবার্য অভিধা হয়ে দাঁড়ায় ইমামুদ-দাওয়াহ।
অবশেষে, ১৯৪৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী রাতে কায়রোতে ইয়াং মুসলিমস এসোসিয়েশানের একটি মিটিংয়ে হাসানুল বান্না মেহমান হিসেবে বক্তব্য দেন। মিটিং শেষে তিনি উক্ত সংস্থার কার্যালয় থেকে বের হয়ে গাড়ীতে ওঠার সময় আততায়ীর গুলিতে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে মাটিতে ঢলে পড়েন। তাঁর সাথের সংগীরা তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে অল্প সময় অতিবাহিত হওয়ার পর পরই আল্লাহর এই বান্দা শাহাদাত বরণ করনে।
হাসানুল বান্না ছিলেন উম্মার মধ্যে ঐক্য ও সংহতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এক অগ্রনায়ক। তাঁর বক্তব্য বিবৃতি মুসলিম উম্মাহর মাঝে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ তৈরি করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীভূত থাকতো। তিনি কখনো তাঁর কথা ও লিখনীতে এমন কোনো শব্দ ব্যবহার করতেন না যাতে কারো মনে কষ্ট হতে পারে। বিশ্বের সকল ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের উচিত শহীদ হাসানুল বান্নার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে ইসলামের পথে অবিচল টিকে থাকা।
আল্লাহ পাক যেনো শহীদ হাসানুল বান্নার দাওয়াতী মিশনকে যেন কবুল করেন। আমিন।