জেলা প্রতিনিধি মুন্সীগঞ্জঃ সিরাজদিখানের এক শিক্ষার্থীকে পিটানো অভিযোগ উঠেছে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সিরাজদিখান উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের রশুনীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান নোহা বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ‘খ’ শাখার মেধাবী ছাত্রী। সে পূর্ব রশুনিয়া ইউনিয়নের মো.বাবলু শেখের মেয়ে নুসরাত জাহান নোহা। অভিযুক্ত শিক্ষক ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা বেগম কেয়া।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর বাবা মো. বাবলু শেখ জানান, প্রতিদিনের মত আমার মেয়ে নুসরাত জাহান নোহা (৩০ সেপ্টেম্বর) স্কুলে যায়। মেয়ে বাসায় এসে কান্নাকাটি করছে। তখন আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে সে প্রথমে বয়ে কিছু বলে নাই। তখন সে সাথে সাথে মাথা ঘুরে পড়ে যাই। তাড়াতাড়ি করে মাথায় পানি দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেই। পরে মেয়ের কাছ থেকে জানতে পারলাম তার সহপাঠীর সাথে কথার কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে স্কুলে প্রধান শিক্ষক আমার মেয়েকে অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে মেয়েকে উদ্দেশ্যে প্রনোদীতভাবে চিকন বাশেঁর লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে আঘাত করে। যা বিভিন্ন শরীরের চিহ্ন হয়েছে। পরে মেয়ে আবার সন্ধ্যায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ইছাপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়া হয়।
এ বিষয়ে আমি প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে থানায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ের কিছু হয়ে গেলে আজকে আমি কি নিয়ে বাঁচতাম। একজন শিক্ষক এভাবে বেধরকভাবে পিটাতে পারেন না। আমি এই শিক্ষিকার বিচার চাই।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান নোহা বলেন, আমার বন্ধুদের সাথে কথার কাটাকাটি হয়। পরে বন্ধুরা হেড ম্যাডামের কাছে বিচার দিলে। আমাকে অফিস রুমে ডেকে ম্যাডাম আমাকে লাঠি দিয়ে মারে। অনেক মারছে। আর বলছে আমার চোখ উঠিয়ে লুডু খেলবে। এবং কি বাড়িতে গিয়ে আব্বা – আম্মার কাছে না বলি। বললে আরও মারবে। আমি বাড়িতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে মা -বাবার কাছে সব কিছু বলি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা বেগম কেয়া জানান, নুসরাত জাহান নোহার বিরুদ্ধে কতগুলো ছেলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দিয়েছে নোহা মরামারি করেছে। পরে অফিস কক্ষে এনে জিজ্ঞেস করলাম মারামারি কেন করেছো? পরে সে স্বীকার করেছে। পরে তার হাতে দুইটা বেতের বারি দিয়েছি। চোখ উঠিয়ে লুডু খেলবেন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রশ্নে আসেনা। এত ছোট বাচ্চাকে কেন আমি এই কথা বলবো?
এ বিষয়ে সিরাজদিখান থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনিচুর রহমানকে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এই বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো.বেলায়েত হোসেন বলেন, আমি ছুটিতে। শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে শুনেছি। তারা সন্তানকে মারতে পারে না। কারণ বাবা-মা সন্তানকে মারে না। আদর সোহাগ দিয়ে রাখে। শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তি দেয়ার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে পরিপত্র জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আমরা বিষয়টা তদন্ত করে যদি অপরাধ করে থাকে তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাব্বির আহমেদ জানান, অফিসের কাছে আমি বাহিরে ছিলাম। অভিযোগ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।