আপনি কি কল্পনা করতে পারেন, যদি শেখ হাসিনা পালিয়ে না যেতেন, যিনি টানা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা হিসেবে ও দলীয় নেত্রী হিসেবে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা এবং প্রভাব অর্জন করেছেন, দেশের পরিস্থিতি আর ও কি হত ?
যদি সেনাবাহিনী এবং বিজিবি গণআন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতি সহিংস আচরণ করতেন, তাহলে কী হতে পারত? গণহত্যার মাত্রা এবং গৃহযুদ্ধের সম্ভাব্যতা কতটা ভয়াবহ হতে পারত?
ভারতের কৌতূহল এবং হস্তক্ষেপের আকাঙ্ক্ষাও যে কোনো মুহূর্তে ঘটে যেতে পারত।
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর হয়তো আমাদের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার—উজ—জামান এবং দেশপ্রেমিক মধ্যম—স্তরের সেনা কর্মকর্তাদের উপর নির্ভর করছিল—যারা দেশ এবং দেশের জনগণকে নিজেদের জীবন থেকেও বেশি ভালোবাসেন।
২০২৪ সালের ২৩ জুন, জেনারেল ওয়াকার—উজ—জামান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ঠিক সেই সময়েই দেশজুড়ে গণআন্দোলনের ঢেউ ওঠে। শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং আন্দোলন শুরু হয়, যা সহিংসতার দিকে ধাবিত হতে থাকে।
এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে জেনারেল ওয়াকার—উজ—জামান একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন—তিনি সেনাবাহিনীকে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন এবং শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে বলেন। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর, জেনারেল ওয়াকার—উজ—জামান তাকে নিরাপদে ভারতে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন।
এই সিদ্ধান্তটি ছিল বুদ্ধিদীপ্ত এবং যথাযথ, কারণ যদি শেখ হাসিনা দেশে থেকে যেতেন, পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারত। আরও অনেক রক্তপাতের আশঙ্কা ছিল। তার পালিয়ে যাওয়ার ফলে দেশে শান্তি ফিরে আসে, এবং সেনাবাহিনী জনগণের আস্থা অর্জন করে।অনেকে মনে করেন,শেখ হাসিনা কে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে দেওয়া ঠিক হয় নি। কিন্তু এর মাধ্যমে জাতি বিশাল এক রক্তক্ষরণ থেকে রক্ষা পেয়েছে। তিনি হয়ত শেখ হাসিনা কে প্রাণে বাঁচিয়েছেন, কিন্তু শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কেরিয়ার কে চিরতরে শেষ করে দিয়েছেন। আর আওয়ামী লীগকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছেন। শেখ হাসিনা দেশে মারা গেলে আর্মি এর দায় এড়াতে পারতনা। আবার অন্যদিকে জাতির বুকে গুলি করাও তার ঠিক হত না। দেশে একটি দীর্ঘস্থায়ী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয়ে যেত যেতা জেনারেল খুব প্রজ্ঞার সাথেই হ্যান্ডল করেছেন । এই জন্য তিনি জাতির কাছে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা:
জেনারেল ওয়াকার—উজ—জামানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে।
তিনি সেনাবাহিনীকে শুধুমাত্র একটি পেশাদার বাহিনী হিসেবে নয়, বরং একটি মানবিক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করেন।
তার বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্ব এবং জনসাধারণের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাবের ফলে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহলেও তার এই নেতৃত্ব প্রশংসিত হয়।
তিনি কেবল দেশকে রক্তক্ষয়ী সংঘাত থেকে রক্ষা করেননি, বরং ভবিষ্যতের জন্য একটি স্থিতিশীল ভিত্তি স্থাপন করেছেন।
শেখ হাসিনার সাথে পারিবারিক সম্পর্ক:
বিপ্লব প্রতিরোধ ও দেশের স্থিতিশীলতা:
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি:
- জেনারেল ওয়াকার—উজ—জামানের এই নেতৃত্ব শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রশংসিত হয়েছে।
- তার দূরদর্শী সিদ্ধান্ত এবং মানবিক মনোভাবের কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিক মহলেও সমাদৃত হয়েছে।
- তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পেশাদারিত্বের নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
- তার সময়োপযোগী পদক্ষেপ এবং সংকটময় পরিস্থিতি থেকে দেশের মানুষকে রক্ষার জন্য তাকে সারা বিশ্বেই প্রশংসা করা হচ্ছে।
বন্যা মোকাবেলায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা:
সম্প্রতি দক্ষিণ—পূর্বাঞ্চলে ঘটে যাওয়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাহায্যে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। জেনারেল ওয়াকার—উজ—জামান নিজে মাঠে উপস্থিত থেকে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করেন এবং তার সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। তার এই ভূমিকা সাধারণ মানুষের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছে।
আরও পড়ুন,
ভবিষ্যতের বাংলাদেশ:
জেনারেল ওয়াকার—উজ—জামানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ শুধু একটি সংকটময় সময় পার করেনি, বরং একটি নতুন ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হয়েছে। তার দৃঢ়তা, দূরদর্শিতা এবং দেশপ্রেম বাংলাদেশকে আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে নিয়ে যাবে। তিনি শুধু বর্তমান সমস্যাগুলো সমাধান করেছেন তা নয়, ভবিষ্যতে দেশের শান্তি এবং স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য একটি শক্ত ভিত্তি স্থাপন করেছেন।বাংলার ইতিহাসে আর অনেক জেনারেল এসেছেন কিন্তু কেউ এত প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা ও দেশ প্রেমের উদাহরণ রাখতে পারেনি। তিনি যদি দেশে একটি নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে ম ৪তসহায়তা করে একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন, তবে জাতির ইতিহাসে তার নাম সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে। আর বাংলাদেশ আর্মি কে মানুষ আর ও বিশ্বাস ও আস্থার প্রতীক হিসাবে মানুষের মনের গভীরে স্থান করে দিবে যা কোনদিন কেউ প্রতিস্থাপন করতে পারবে না।
মোঃ নুরুল হক
লেখক আইইউবিএটির ইংরেজির সহকারী অধ্যাপক এবং ইউপিএম—এর পিএইচডি প্রার্থী।