ইজ্জদ্দিন আল-কাসসাম উসমানীয় সম্রাজ্যের সিরিয়ার উত্তরপশ্চিমে জাবলাহ নামক স্থানে ১৯ ডিসেম্বর ১৮৮২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বিশ্বব্যাপী ইউরোপীয়ানদের দ্বারা মুসলিমদের ভূমি দখল করে নেওয়ার কারণে উসমানীয় খিলাফত যখন ভেঙ্গে পড়ছিল এবং এই সম্রাজ্যের পতন হচ্ছিল এমন সময়ে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি।
তার বাবা আবদুল কাদির ছিলেন উসমানীয় যুগে শরিয়া আদালতের একজন কর্মকর্তা। আল-কাসসাম আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি একাধারে ছিলেন ইসলামিক পণ্ডিত, বিদ্রোহী নেতা, শিক্ষক ও ইমাম। তিনি নৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে ইসলামি পুনর্জাগরণ কর্মসূচি শুরু করেন। তিনি জিহাদের মাধ্যমে নিজেদেরকে রক্ষা করার বিষয়ে ইসলামের সমকালীন ব্যাখ্যার প্রয়োজনীয়তার কথা প্রচার করেছিলেন।
- আল-কাসসাম তার অনুগামীদের সাথে নিয়ে মদ পরিবহনকারী কাফেলার উপর আক্রমণ করেছিলেন।
- তিনি ইতালীয়দের বিরুদ্ধে জিহাদ করেছিলেন যখন তারা লিবিয়া আক্রমণ করেছিল।
- যখন ফরাসিরা সিরিয়া আক্রমণ করেছিল তখন তাদের বিরুদ্ধে তিনি সশস্ত্র জিহাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
- ১৯৩০ সালে তিনি ফিলিস্তিনে ইহুদিবাদী ও ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য খিলাফতের পতনের পর একটি সশস্ত্র জিহাদী সংগঠন গঠন করেন।
- ১৯৩৫ সালের ২০ নভেম্বর সম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করার পর তাকে হত্যা করে দখলদার বাহিনী।
- তার শাহাদাতের পর হাজার হাজার মুসলিম জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন এবং এই ক্ষোভ থেকেই শেষ পর্যন্ত ১৯৩৬ সালে প্যালেস্টাইনে আরব বিদ্রোহ পরিচালিত হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ইজ্জউদ্দিন আল-কাসসামের নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেডের নাম। দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময় থেকে এটি ইহুদীবাদী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের আক্রমণের প্রধান লক্ষবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এই সংগঠনটির শক্তি, সামর্থ্য ও যুদ্ধ কৌশল বহু রাষ্ট্রকে বিস্মিত করে দিয়েছে।
আজ সেই মহাবীর ইজ্জদ্দিন আল-কাসসামের শাহাদাত বার্ষিকী, আল্লাহ তাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুক। (আমন)
লেখক জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান
আল- আজহার বিশ্ববিদ্যালয়
কায়রো, মিশর