চলতি লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ফের ক্ষমতায় এলে নরেন্দ্র মোদির পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী হবেন অমিত শাহ। আবগারি দুর্নীতি মামলায় কারাগার থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন লাভের পর সম্প্রতি এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এর পর থেকে দেশটিতে আলোচনার মূল বিষয় হয়ে দাাঁড়িয়েছে, আসলেই কি মোদি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন না; আর সত্যি না নিলে কে ধরবেন বিজেপির হাল?
কারাগার থেকে বের হওয়ার পর শনিবার (১১ মে) সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেজরিওয়াল বলেন, ‘আগামী বছর মোদির বয়স হবে ৭৫ বছর। আর বিজেপিতে কারও ৭৫ বছর বয়স হয়ে গেলেই তিনি অবসর নেন। আদভানি, মুরলি মনোহর যোশী, সুমিত্রা মহাজন, যশবন্ত সিনহা সবাই অবসর নিয়েছেন। সেই অনুযায়ী আগামী বছর ১৭ সেপ্টেম্বর মোদিও অবসর নেবেন। তখন কে হবেন প্রধানমন্ত্রী?
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এরপর অমিত শাহকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে। সুতরাং মোদি নিজের জন্য নয়, অমিত শাহের জন্য ভোট চাইছেন। তাহলে মোদির গ্যারান্টি পূরণ করবে কে?’
তবে কেজরিওয়ালের মন্তব্যের বিষয়ে দ্রুতই পাল্টা জবাব দিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একই দিন হায়দরাবাদে নির্বাচনী সভা শেষে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর ভবিষ্যদ্বাণী সম্পর্কে মোদির সেকেন্ড ইন কমান্ড বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদিজিকে রিপ্লেস করা হবে না। মোদিজিকে বদলানোর প্রয়োজনই নেই। আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছি সকলকে।’
অমিত শাহ বলেন, ‘সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। নরেন্দ্র মোদিজিকে বদল করা হবে না। আমি কেজরিওয়াল অ্যান্ড কোম্পানিকে বলে দিতে চাই, মোদিজি ৭৫ বছরে পা দেবেন বলে আপনাদের উৎফুল্ল হওয়ার কোনো কারণ নেই। বিজেপির সংবিধানে এটা কোথাও লেখা নেই, তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। এর এ বিষয়ে কোনো বিভ্রান্তি নেই।’
অন্যদিকে, মোদির আরেক সম্ভাব্য উত্তরসূরি হলেন বিজেপির সাবেক সভাপতি নীতিন গড়করি। ব্যবসায়িক এবং আরএসএস থেকে তার ওপর শক্তিশালী সমর্থন রয়েছে। তবে নিজ দলের কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা সময়ে বক্তব্য দেয়ায় শীর্ষ মহল বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদিসহ বিজেপির কেন্দ্রীয় অনেক নেতা নাখোশ রয়েছেন। এমনকি ২০২২ সালে গড়গরিকে দলের সংসদীয় বোর্ড থেকেও বাদ দেয়া হয়।
চলমান লোকসভা নির্বাচনের ওপর বিজেপির প্রধানমন্ত্রীর প্রার্থীতাসহ অনেক কিছু নির্ভর করছে। বিজেপি জয়ী হয়ে সরকার গঠন করলে নরেন্দ্র মোদি টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হবেন — এটা নিশ্চিত করে বলাই যায়। বিপরীতে বিজেপির হতাশাজনক ফলাফলে মোদির উত্তরাধিকার নির্বাচনে দলটি তোড়জোড় শুরু করতে পারে।