চলতি ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় প্রকাশিত ফলে জিপিএ-৫ পেয়েও বিষাদের ছায়া নেমেছে শেরপুরের শিক্ষার্থী মাশুরা নোকাদ্দেস তানাজের বাড়িতে। কারণ যাকে নিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠার কথা ছিল বাড়ির সবার, সেই তানাজই যে আজ বেঁচে নেই।
জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলার চরশিমুলচুড়া গ্রামের বাসিন্দা কুয়েতপ্রবাসী মোকাদ্দেসুর রহমান তোরাব ও মোছা. মনিরা বেগম দম্পতির তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে মাশুরা নোকাদ্দেস তানাজই বড়। তানাজ শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো। সেই সুবাদে শেরপুর শহরের নওহাটা এলাকায় বাড়ি করে সেখানেই থাকতেন তারা। চলতি বছর তানাজ এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। তবে ফল প্রকাশের আগেই গত ৩১ মার্চ ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় তানাজ ও তার ছোটভাই আনাছ নিহত হয়।
রবিবার এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা যায়, তানাজ জিপিএ-৫ পেয়েছে। শুধুমাত্র বাংলা বিষয়ে এ গ্রেড ছাড়া বাকি সব বিষয়েই এ প্লাস পেয়েছে সে। এ সংবাদ শোনার পর তার বাড়িতে আনন্দের বদলে যেন আরও বিষাদ নেমে আসে। সরেজমিনে শহরের নওহাটা এলাকায় তানাজের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত তানাজের মা মোছা. মনিরা এখনও পুরোপুরি সেরে উঠেননি। অসুস্থ অবস্থায়ই মেয়ের কথা স্মরণ করে কাঁদছেন তিনি। আর মেয়ের ছবি ও স্কুলের আইডি কার্ড বের করে অশ্রুসিক্ত চোখে বারবার হাত বুলিয়ে দেখছেন বাবা মোকাদ্দেসুর রহমান তোরাব। মেয়েকে চিকিৎসক বানানোর স্বপ্ন ছিল তাদের। কিন্তু একটি সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে তাদের সেই স্বপ্ন।
তারা জানান, তানাজ খুবই মেধাবী ছিল। সে চিকিৎসক হতে চেয়েছিল। পড়াশোনার প্রতি ওর আগ্রহ আর মনোযোগ দেখে আমরা ওকে চিকিৎসকই বানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু একটি দুর্ঘটনা আমাদের ছেলে-মেয়ের সাথে সাথে সব স্বপ্নও কেড়ে নিয়েছে।