❝বর্তমান সময়ের পাঠকপ্রিয় লেখক সেলিম হাসান। যার আত্মপ্রকাশ হয়েছিল একজন ঔপন্যাসিক হিসেবে। ২০২২ সালের বইমেলায় ‘সময়ের সুর প্রকাশন’ থেকে তার প্রথম উপন্যাস প্রকাশ পায়। সেখান থেকেই উত্থান। এর পর অন্য কিছু ভাবেননি। নিজের অনবদ্য গুছানো লেখা দিয়েই লেখক হিসেবেই জাহির করেন পাঠকের সামনে। এ-সব নিয়ে কথা বলেছেন দৈনিক আমার কথার সাথে।❞
প্রথমে জানতে চাই,লেখালেখির অনুপ্রেরণা টা আসলে কোথায় পেয়েছেন?
অনুপ্রেরণার কথা বলতে হলে আগে একটি গল্প বলতে হয়।
দারুণ সন্ধ্যাবেলা! সিপাহশালা দৌলতখাঁ, যাও এই মুহূর্তে ওই নবজাত কন্যা শিশুকে আমার দরবারে হাজির করো। আমি তাই যাচ্ছি হুজুর,তাই যাচ্ছি। সংলাপ উচ্চারণের মধ্যে দিয়ে উদযাপন করা হতো ১৬ই ডিসেম্বর। একটি বছরের অপেক্ষার পড়ে আসে সেই স্মৃতিময় দিনটি। সারাদিন বিভিন্ন খেলার মধ্যে দিয়ে উদযাপন আর রাত হতেই চলত সেই অনাকাঙ্খিত গ্রাম্য নাটক ইশশ, সেই দিনগুলো আজ-ও চোখের পাতায় যেন লেগে লেগে রয়েছে। মনোহর রূপে সাজিয়ে গ্রামের অভিজ্ঞরা অভিনয় করে।পোশাকের মাধুর্যে অনেককেই চিনতে পারতাম না। সেই ছোটবেলা থেকে নাটকের প্রতি এক অন্য রকমের ভালোবাসা জন্মেছে। আমার দুই কাকা সেই নাটকে মূখ্য ভূমিকা রাখত৷ সেই সুবাদে নাটকের রিহার্সাল দেখার সুযোগ হত আমার।আমি ভিষণ মুগ্ধ হয়ে দেখতাম আর মনের মধ্যে যেন সব গেঁথে নিতাম পছন্দের চরিত্র ও ডায়লগ। সেরকম ভঙ্গিতে বন্ধুদের সাথে কথা বলতাম তখন তারা দেখে হাসত তালিও দিত। তখন আমার অনেক আনন্দ হত।তারপর সারা রাত নাটক দেখে বাড়িতে ফিরতাম আনন্দ নিয়ে। অবশ্য কষ্টও হত শয়তান চরিত্রের লোকটি যে নায়িকার সঙ্গে অত্যাচার করছিল সেটা কষ্টের কারণ। নাটক শেষে বাড়িতে কাকা বইটি আনতেন।আমার সেই থেকে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে। সংকল্প জাগত আমি যদি লিখতে পারতাম। সেই ঝোঁক হৃদয়ে এমন ভাবে গেঁথে যায় সারাক্ষণ সেরকম গল্প মনের মধ্য রুপ দিতাম তারপর খাতার পৃষ্ঠায় একটুআধটু লিখার চেষ্টা। সেই ছোটবেলার চেষ্টা আজ অবধি চলছে। আর হুমায়ুন আহমেদ স্যার আমার প্রিয় লেখকদের মধ্যে একজন। যাঁর আমাকে ভীষণ অনুপ্রেরণা দেয়।
লেখালেখি নিয়ে আপনার ব্যস্ততা কেমন?
ব্যস্ততা এখন খুব বেশিই, বই লেখার পাশাপাশি বেশিকিছু পত্রিকায় ফিচার লেখক হিসেবে নিযুক্ত রয়েছি। তাই সেদিকেও সময় দিতে হয়। পাঠকরা আমাকে ভিষণ আপন করে নিয়েছে তাঁরা প্রতিনিয়ত আমার বই পড়ছেন। এতে আমার তাদের জন্য নতুন কিছু করার আগ্রহ দ্বিগুণ বাড়ে।
এ পর্যন্ত আমার কতগুলো বই প্রকাশিত হয়েছে?
প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা তিনটি তবে প্রতাশিতব্য বইয়ের সংখ্যা একাধিক। ২০২২-এ ‘নীলাবতী নীলাঞ্জনা’ এবং ২০২৩-এ ‘প্রতিটি রাতই ভয়ংকর ছিল’ প্রকাশ পায়। ২০২৪-এ ‘যে গল্প আজও ছাপা হয়নি’প্রকাশিত হয়। খুব শীগ্রই প্রতিটি রাতই ভয়ংকর ছিল বইটির তৃতীয় সংস্করণ ও যে গল্প আজও ছাপা হয়নি বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হবে। ইতোমধ্যে প্রকাশনীর সঙ্গে বইগুলোর চুক্তি সম্পন্ন করেছি, নতুন প্রচ্ছদ এসেছে। ২০২৫-এ ‘মৃত ফুল’ নামক একটি সামাজিক থ্রিলার উপন্যাস আসবে। আরো একটি বই আসার সম্ভাবনা আছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
আমি সবসময় ভালো কিছু কলমের কালিতে লিখতে চাই। সত্যের পথে সহজ সুন্দর সাবলীল ও প্রাঞ্জল ভাষায় কথা বলে যেতে চাই। তবে আমার নিজের লেখা গল্পে একটি নাটক অথবা ওটিটি ফিকশনে কাজ করতে চাই।