1. dailyamarkothabd@gmail.com : admin :
  2. hmhabibullah2000@gmail.com : Habib :
  3. sabbirmamun402@gmail.com : নিজস্ব সংবাদ :
তারেক জিয়ার অতীত ও ভবিষ্যৎ - দৈনিক আমার কথা
সাম্প্রতিক :
নোবিপ্রবিতে ছাত্রদলের আশ্রয়ে ছাত্রলীগ  স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টদের প্রেতাত্মারা এখনও সমাজে রয়েছে: রিজভী আন্তঃজেলা ডাকাত, অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ৮ যবিপ্রবি ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ধনে বৃক্ষরোপণ করলো টিম “উন্নত মম শির” ইউনিয়ন পরিষদে বিলুপ্ত না করার দাবীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় রাজশাহীতে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন ছাত্র আন্দোলনকে জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রণ করেছে : জয় ঈদ ও পূজার ছুটি বাড়তে পারে, নতুন সিদ্ধান্ত আজ রাজস্থলীতে প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে ত্রান কার্য (চাল) এর ডিও বিতরণ গাইবান্ধায় দৈনিক কালবেলা’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

তারেক জিয়ার অতীত ও ভবিষ্যৎ

  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪
মোঃ নুরুল হক

তারেক রহমান, বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বড় ছেলে এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সুযোগ্য পুত্র। পারিবারিক উত্তরাধিকারের কারণে তার রাজনৈতিক উত্থান ছিল অবশ্যম্ভাবী। তবে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে। তারেক জিয়া খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় মেয়াদে ২০০১—২০০৬ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে বিএনপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। ২০০৪ সালে তিনি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ পান, যা দলের ওপর তার কর্তৃত্বকে আরও দৃঢ় করে।

তার মেধাবী বক্তব্য এবং কৌশলগত রাজনৈতিক চিন্তাধারার জন্য তারেক জিয়াকে বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে দেখা হয়েছিল। কিন্তু তার রাজনৈতিক পথচলায় নানা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত এবং ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ তার নেতৃত্বের ওপর প্রশ্নচিহ্ন এনে দিয়েছে। ২০০৭ সালে সেনা—সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাথে আপোস করতে অস্বীকৃতি জানানোর মাধ্যমে তারেকের রাজনৈতিক নেতৃত্বে বিএনপি ও তার নিজের ক্ষতি হয়েছে। এসব বিতর্ক ও অভিযোগের মুখে তারেক বর্তমানে লন্ডনে স্বেচ্ছা—নির্বাসনে রয়েছেন, তবুও তিনি এখনো বিএনপির ওপর তার প্রভাব বজায় রেখেছেন।

তারেক জিয়ার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার দুর্নীতি ও আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ দ্বারা কলঙ্কিত। বিশেষ করে ২০০১—২০০৬ সালে তার মায়ের শাসনামলে ‘হাওয়া ভবন’ নামে পরিচিত একটি ক্ষমতা কেন্দ্রে তিনি দলের বাইরে থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তারেকের নেতৃত্বে দলে স্বজনপ্রীতি ও পৃষ্ঠপোষকতা বেড়ে যায়, এবং এর ফলে সরকারি টেন্ডার ও পদে আনুগত্যের ভিত্তিতে দলীয় লোকজনকে পুরস্কৃত করা হতো, যা দেশের বৈষম্য ও স্থবিরতা বাড়িয়ে দেয়। এইসব দুর্নীতি বিএনপির জনসমর্থনে ব্যাপক ভাঙন ঘটায়। তদুপরি, বিতর্কিত ব্যবসায়ী ও অর্থ পাচারকারীদের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার করে। দলের মধ্যে পরিবারকেন্দ্রিকতা ও ক্ষমতা ভাগাভাগি করা, মেধাবী নেতৃত্বকে প্রমোট না করা, এবং দলের ভেতরে বিভেদ তৈরি হওয়া তারেকের আরেকটি ভুল পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়।

তারেক জিয়ার সহিংস হরতাল ও আন্দোলনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেশের অর্থনীতি ও জনমনে ক্ষোভ বাড়িয়ে দেয়, এবং এর ফলে বিএনপির বিশ্বাসযোগ্যতা আরও হ্রাস পায়। এতে দলটির ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে তার ভূমিকা পালনের সুযোগও কমে যায়।

বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারেক জিয়াকে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করতে হবে এমন একজন নেতার রূপে, যিনি দল বা ব্যক্তিগত লাভের চেয়ে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেন। প্রথমত, তাকে দুর্নীতি ও ব্যর্থতার সেই ইতিহাস থেকে নিজেকে দূরে সরাতে হবে, যা তার এবং বিএনপির বিশ্বাসযোগ্যতাকে নষ্ট করেছে। এর জন্য তাকে অবশ্যই দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠানের সাথে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে এবং দলের অভ্যন্তরে স্বচ্ছতা আনার জন্য অঙ্গীকার করতে হবে। তারেককে রাজনৈতিক সহিংসতা ত্যাগ করে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের পথ গ্রহণ করতে হবে, যাতে জনসমাজে বিএনপির ইতিবাচক ভাবমূর্তি ফিরে আসে। যুব বেকারত্ব, অর্থনৈতিক বৈষম্য, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সমসাময়িক চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবিলা করে তিনি বিএনপির প্রতি তরুণদের আকর্ষণ বাড়াতে পারেন।

তাছাড়া, তিনি নতুন, দক্ষ এবং দূরদর্শী নেতাদের প্রমোট করে দলের কাঠামোকে শক্তিশালী করতে হবে, যারা দলের দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য নিয়ে কাজ করবে। এছাড়াও, তারেক জিয়াকে অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের সাথে কৌশলগত জোট গড়ে তুলতে হবে, যা আওয়ামী লীগকে কার্যকরভাবে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। আত্মগোপন থেকে ফিরে এসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মঞ্চে সক্রিয় অংশগ্রহণ, এবং নিজেকে নতুনভাবে তুলে ধরা তার জন্য অত্যাবশ্যক, যাতে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করে বিএনপিকে আবার শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।

তারেক জিয়ার মনে রাখা উচিত যে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কারণে বিএনপির নেতাকর্মীরা পথে নামতে পারেনি, শেখ হাসিনার সরকার পরিকল্পনা করে তারেকের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার মুছে ফেলার চেষ্টা করছিল। তবে শুধুমাত্র ছাত্র—জনতার আন্দোলনই তারেকের ফিরে আসার পথকে উন্মুক্ত করেছে। তাই, বর্তমান প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নকে গুরুত্ব দিয়ে রাজনৈতিক ও সংস্কারমূলক সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যাতে তরুণ প্রজন্ম বিএনপির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদী হয়।

 

তারেক জিয়াকে অবশ্যই তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং তাদের ক্ষমতা ও প্রভাব সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। যারা তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে ধ্বংস করতে পারে এবং সংস্কারের পরিবর্তনকে প্রতিহত করতে পারে, তাদের বিরুদ্ধে কৌশলী পদক্ষেপ নিতে হবে। দলের মূল নেতৃত্বের প্রতি তার সহানুভূতি এবং তাদের আত্মত্যাগের মূল্যায়ন করতে হবে। যারা বিএনপির আদর্শের জন্য নিজেদের উৎসর্গ করেছে, তাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত, বিশেষত যারা আওয়ামী লীগের ছায়াতলে থেকে ব্যক্তিগত লাভের জন্য কাজ করেনি।

তাছাড়া, তারেককে সাবধান থাকতে হবে দলের সেই নেতাদের থেকে যারা অত্যাচার, শোষণ, চাঁদাবাজি এবং দুর্নীতির সাথে জড়িত। এসব নেতাদের প্রতিহত করতে হবে, যাতে তারা বিএনপিকে আওয়ামী লীগের সমতুল্য করে না তোলে। অতীতের ভুল পুনরাবৃত্তি করলে বিএনপি আওয়ামী লীগের মতো হয়ে যাবে। তারেকের উচিত দেশের জনগণের ভোট ও ভেটোর অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, বেকারত্ব হ্রাস করা, এবং সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা। এতে করে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় রাজনৈতিক মঞ্চে নিজের অবস্থানকে সুসংহত করতে পারবেন এবং বিএনপির রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারবেন।

মোঃ নুরুল হক

লেখক আইইউবিএটি—তে ইংরেজির সহকারী অধ্যাপক এবং ইউপিএম—এ পিএইচডি প্রার্থী

পোস্টটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর
  1. dailyamarkothabd@gmail.com : admin :
  2. hmhabibullah2000@gmail.com : Habib :
  3. sabbirmamun402@gmail.com : সাব্বির আহমেদ :
Social Icons - দৈনিক আমার কথা
Daily Amar Kotha © 2024. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest