আজকে সোনাগাজীতে ২১ বছর বয়সের একজন ছেলের রক্তে সোডিয়াম লবণ পেয়েছি ১৬০ (স্বাভাবিক হল ১৩৫ -১৪৫ )। তার ইতিহাস থেকে জানলাম পড়শু দিন গরম বেশি লাগায় সে ৩ টি স্যালাইন একসাথে মিশিয়ে এক গ্লাসে খেয়েছে। এরপর থেকে তার অস্থিরতা , মাংস ব্যথা ,মাথা ঘুরানো এবং তীব্র বমি ভাব হচ্ছে।জটিলতায় চরম পর্যায়ে ব্রেইন কোমায় যেতে পারে , অতঃপর মৃত্যু । মৃত্যুর কারণ কেউ জানবেনা , বলবে কিভাবে কিভাবে যেন মরে গেল!!
কি করতে হবে ?দিনে দুই থেকে তিনটি স্যালাইনও অনেককেই খেতে দেখা যায়। আসলে স্যালাইন খাওয়ার ফলে রক্তে যে লবণের ক্রিয়া হয় তা সব ধরনের শরীরের জন্য কতটা উপকারী আমরা কি সঠিকভাবে জানি? এক্ষেত্রে যদি কারো হাই ব্লাড প্রেসার থাকে এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়াই স্যালাইন খায় তাতে কি তার শরীরে প্রভাব পড়বে না?
স্যালাইনের উপাদানে সোডিয়াম ক্লোরাইড উপস্থিত থাকার কারণে রক্তে ইলেকটোলাইট ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে, যার কারণে শ্বাসকষ্ট হলেও তা অস্বাভাবিক হবে না। অতিরিক্ত স্যালাইন খাওয়ার ফলে রক্তে লবণের পরিমাণ বেড়ে হাই ব্লাড প্রেসারের সমস্যাও বেড়ে যেতে পারে। তুচ্ছ কারণে স্যালাইন খাওয়া স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর।
এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বৃদ্ধি খুবই জরুরি। স্যালাইন খাওয়ার আগে অবশ্যই সঠিক পরিমাপ জানতে হবে। এ ছাড়াও দিনে এক প্যাকেটের বেশি স্যালাইন খেলে তা অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
স্যালাইন খেতে হলে অবশ্যই ৫০০ মিলি পানিতে একটি স্যালাইন মিশিয়ে খেতে হবে।
খাওয়ার স্যালাইন সবসময় সঠিক নিয়মে বানাতে হবে। মুখের স্বাদ বাড়ানোর জন্য কোন উপকরণ বাড়তি প্রয়োগ করলে যে কোন সময় এটি মৃত্যুঝুঁকির কারন হতে পারে।
সতর্কতা:
১.কোনোভাবেই পানির পরিমাণ কম বেশি করা যাবে না, এক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল তো পাওয়া যাবেই না, বরং শিশুদের ক্ষেত্রে ক্ষতিও হতে পারে।
২.কোনোভাবেই স্যালাইনে পানি ছাড়া অন্য কিছু যেমন দুধ, স্যুপ বা ফলের জ্যুস বা সফট ড্রিংকসেও মেশানো যাবে না। এমনকি চিনিও মেশানো যাবে না।
৩.শিশুদের ক্ষেত্রে স্যালাইন কাপে করে খাওয়ানোই ভালো, কারণ ফিডিং বোতল পুরোপুরি পরিষ্কার করা ঝামেলা হয়ে যায় অনেকসময়।
৪.গরম পানিতে স্যালাইন বানানো যাবে না। স্যালাইনের পানিও গরম করা যাবে না।
৫.বানানোর পর ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্যালাইন ভালো থাকে। অর্থাৎ বানানোর ১২ ঘণ্টা পর আর স্যালাইন খাওয়া যাবে না, সেটি ফেলে দিতে হবে।